Tuesday, April 12, 2016

 বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহামাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।
রাব্বুনাল্লাহ্‌
আল্লাহই আমাদের একমাত্র রব্ব- সার্বভৌমত্বের একমাত্র মালিক, আইনদাতা-বিধানদাতা ও নিরংকুশ কর্তা অন্য কেউ নয়।

আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নেই কোন ইলাহ্‌-দাসত্ব আইনের আনুগত্য ও উপাসনা পাওয়ার অধিকারি সত্তা একমাত্র আল্লাহ্‌ ব্যতীত।

আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ্`র রাসুল শর্তহীন আনূগত্য (অনুসরন ও অনুকরণ) পাওয়ার অধিকারী একমাত্র নেতা।

"ইসলামী সমাজ"
উপরের উল্লেখিত ইসলামের মৌলিক তিনটা বিষয়ের ভিক্তিতে উলিল আমরের অর্থ্যাৎ আমীরের আনুগত্যের বায়াত গ্রহন করে ইসলামী সমাজ গঠনে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে, "ইসলামী সমাজ" ।
ইসলামী সমাজ গঠন আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঈমানী ও নৌতিক দ্বায়িত্ব পালনে আন্তরিক আহবান জানাচ্ছি; আমীর, ইসলামী সমাজ ।


সার্বভৌমত্ব কাহাকে বলে ?উত্তরঃ- মানুষের জীবনের সকল দিক-বিভাগসহ সমগ্র সৃষ্টি জগতের চূড়ান্ত মালিকানা এবং হুকুম, নিয়ন্ত্রন ও পরিচালনা করার সর্বোচ্চ ক্ষমতাকে সার্বভৌমত্ব বলে ।


"সার্বভৌমত্বের" মালিক কে হবে ?উত্তরঃ- সার্বভৌমত্বের মালিক হওয়ার জন্য চিরন্তন ও চিরস্থায়ী সত্বা হওয়া অপরিহার্য্য বিধায়ঃ আল্লাহই সার্বভৌমত্বের একমাত্র মালিক। আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ চিরন্তন ও চিরস্থায়ী নয় বিধায় মানুষসহ কোন সৃষ্টিই সার্বভৌমত্বের মালিক নয়, হতেও পারে না।


সমাজ ও রাষ্টের মূল বিষয় কি ? রাষ্টের মূল উপাদান কয়টি ও কি কি ?উত্তরঃ- সমাজ ও রাষ্টের মূল বিষয় সার্বভৌমত্ব । রাষ্টের মৌলিক উপাদান ৪টি
যথাঃ- ০১-সার্বভৌমত্ব ০২- ভূখন্ড ০৩-জনসমষ্টি এবং ৪- সরকার ।

সমাজ ও রাষ্টের ক্ষেত্রে "সার্বভৌমত্ব" কি?উত্তরঃ- সমাজ ও রাষ্টের ক্ষেত্রে সার্বভৌমত্ব হচ্ছে- সমাজ ও রাষ্টের মালিকানা এবং সমাজ ও রাষ্ট পরিচালনায় আইন-বিধান প্রণয়ন ও প্রয়োগের সর্বোচ্চ ক্ষমতা ।


মালিকানা কাহাকে বলে ?উত্তরঃ- মালিক হওয়ার যোগ্যতা , গুন, বৈশিষ্ট্য ও এ সবের ভিক্তিতে সত্বাধিকারকেই মালিকানা বলে

"সার্বভৌমত্বের" বৈষিষ্ট্য সমূহ কি কি ?উত্তরঃ- (০১) মৌলিক ক্ষমতা (Originality):- এমন ক্ষমতা যার সমকক্ষ বা উর্ধেব কোন শক্তি নেই ।
(০২) চরম ক্ষমতা (Absoluteness):- নিরংকুশ ও সীমাহীন ক্ষমতা ।
(০৩) সর্বব্যাপকতা ও সর্বজনীনতা (Univarsality And Comprehensiveness):- এ ক্ষমতা সর্বজনীন ও সমভাবে পরিব্যাপ্ত ।
(০৪) স্থায়িত্ব (Permanence):- এ ক্ষমতা স্থায়ী ও অক্ষুন্ন থাকে ।
(০৫) অবিভাজ্যতা (Indivisibility):- এটা এমন ক্ষমতা যা বিভক্ত করা যায় না ।
(০৬) অহস্তান্তর যোগ্য (Inalienability):- এমন ক্ষমতা যা হস্তান্তর যোগ্য নয় । এ ক্ষমতা বদল হওয়ার যোগ্য নয় ।
(০৭) এককত্ব বা অনন্যতা (Exclusiveness):- এ ক্ষমতা একক ও অনন্য যার প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ নেই ।

"সার্বভৌমত্বের" মিমাংসা না করে সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন ও পরিচালনা করা অসম্ভব কেন ?উত্তরঃ- সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন ও পরিচালনা করা হবে আইন-বিধান দ্বারা যা মূলত সার্বভৌমত্বের মালিকের পক্ষ্য থেকেই আসবে । সার্বভৌমত্বের মিমাংসা না হলে একই বিষয়ে বহু রকমের আইন-বিধান আসার সুযোগ থাকে, যার কারনে অনক্য ও বিশ্রৃংখলা দেখা দেবে । সার্বভৌমত্বের মিমাংসা হলে- অর্থ্যাত সার্বভৌমত্বের মালিক ঠিক হলে একই বিষয়ে বহু রকম আইন আসার সুযোগ বন্ধ হবে, একই সার্বভৌমত্ব থেকে প্রতিটি বিষয়ে একই রকম আইন আসবে যার ফলে মানুষের মাঝে ঐক্য এবং শৃংখলা বজায় থাকবে, সমাজ ও রাষ্ট্র একই রকম আইন দ্বারা গঠিত ও পরিচালিত হবে । যেহেতু সার্বভৌমত্বের মিমাংসা না হলে অনৈক্য ও বিশৃংখলা দেখা দিবে, যার কারনে সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন ও পরিচালনা করা একেবারেই অসম্ভব ।


আইন কাকে বলে ?উত্তরঃ- সার্বভৌম ক্ষমতা তথা সার্বভৌমত্বের মালিক যিনি- তার আদেশ, নিষেধ, ইচ্ছা ও মতামতকেই মূলত আইন বলে ।
কর্তৃত্ব কাকে বলে ?
উত্তরঃ- আইন প্রযোগ বা পরিচালনাকেই কর্তৃত্ব বলে ।

আইন ও কর্তৃত্ব কার হবে ?
উত্তরঃ- সার্বভৌমত্ব যার আইন-বিধান ও কর্তৃত্ব তারই হবে । সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহর, ফলে আইন-বিধান ও কর্তৃত্ব একমাত্র তারই হবে; অন্য কারো নয় ।


সমাজ ও রাষ্ট্র কেন ?উত্তরঃ- মানুষের প্রযোজন পূরণ ও কল্যান সাধনের জন্যই সমাজ ও রাষ্ট্র ।


মানুষের জীবনের মূল সমস্যা কি ?উত্তরঃ-সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন এবং পরিচালনায় মানুষের সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্বই মানব জীবনের মূল সমস্যা । মানুষের সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্বের কারনে সমাজ ও রাষ্ট্রের মানুষ মানুষেরই মনগড়া আইনের আনুগত্য এবং মানুষের মনগড়া আইনে গঠিত ও পরিচালিত নেতার আনুগত্য করতে বাধ্য হয় । ফলে মানুষ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অবাধ্যতা এবং মানুষকে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আল্লাহর সমকক্ষ গন্য করায় আল্লাহর বিভিন্ন রকম আযাব-গযবের শিকার হয়ে মহা ক্ষতিতে নিমজ্জিত হয়, তাদের দুনিয়ার জীবনে দেখা দেয় চরম দুর্ভোগ ও অশান্তি এবং আখিরাতের জীবন হয় ধবংস ।

সমাজ ও রাষ্ট্র মানুষের জন্য অকল্যানকর হয় কখন ?উত্তরঃ- সমাজ ও রাষ্ট্র যখন মানুষের সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্বের ভিক্তিতে মানব রচিত ব্যাবস্থা দ্বারা গঠিত ও পরিচালিত হয় তখনি সমাজ ও রাষ্ট্র মানুষের জন্য অকল্যানকর হয় । কারন মানব রচিত ব্যাবস্থা মূলতঃ আল্লাহ রাব্বুন আলামীনের আযাব-গযবের পথ ।

কল্যানকর সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যাবস্থা কোনটি ?উত্তরঃ- সার্বভৌম ক্ষমতার একমাত্র মালিক সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্বের ভিক্তিতে আল্লাহ প্রদত্ব কল্যানকর ও পরিপূর্ণ একমাত্র জীবন ব্যবস্থা "ইসলাম" এর আইন-বিধান দ্বারা গঠিত ও পরিচালিত সমাজ ও রাষ্ট্রই মানুষের জন্য কল্যানকর সমাজ ও রাষ্ট্র ।

ইসলামের মৌলিক বিষয় কয়টি ও কি কি ?উত্তরঃ- আল্লাহ রাব্বুন আলামীন প্রদত্ব কল্যানকর ও পরিপূর্ণ একমাত্র জীবন ব্যবস্থা "ইসলাম" এর মৌলিক বিষয় ৩টি-
(ক) আল্লাহর রুবুবিয়্যাতে তাওহীদ- সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও নিরংকুশ কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহর, মানুষের নয় । এ বিষয়টি গ্রহনকারী ব্যাক্তিদের ঘোষনা হচ্ছে- রাব্বুনাল্লাহ- আল্লাহই আমাদের একমাত্র সার্বভৌমত্বের মালিক, আইনদাতা-বিধানদাতা ও নিরংকুশ কর্তা অন্য কেউ নয় । হাদীসের ভাষায় এরই ঘোষনা হচ্ছে, আল্লাহু আকবার -সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহর । এটাই আল্লাহর প্রতি ঈমান ।
(খ) আল্লাহর উলুহিয়্যাতে তাওহীদ- দাসত্ব, আইনের আনূগত্য ও উপাসনা একমাত্র আল্লাহর, অন্য কারো নয় । এ বিষয়টি গ্রহনকারী ব্যাক্তির সাক্ষ্য হচ্ছে -"আশহাদু আল্লা-ইল্লাহ ইল্লাল্লাহ-আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে নেই কোন ইলাহ- দাসত্ব আইনের আনুগত্য ও উপাসনা পাওয়ার অধিকারী সত্বা একমাত্র আল্লাহ ব্যাতীত । এটাই 'ইসলাম' গ্রহনের আঙ্গীকার- একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করার অঙ্গীকার ।
(গ) আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নেতৃত্বের আনুগত্যের তাওহীদ- শর্তহীন আনুগত্য (অনুসরণ-অনুকরণ) একমাত্র আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাসু আলাইহি ওয়া সাল্লামের, অন্য কারো নয় । এ বিষয়টি গ্রহনকারী ব্যাক্তির সাক্ষ্য হচ্ছে "আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুল্লুল্লাহ- আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসূল- শর্তহীন আনুগত্য (অনুসরন ও অনুকরন) পাওয়ার অধিকারী একমাত্র নেতা অন্য কেউ নয় । এটাই ইসলাম বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ।
ইসলামের মৌলিক এই তিনটি বিষয় " আল্লাহর প্রতি ঈমান, "ইসলাম গ্রহনের অঙ্গীকার", "ইসলাম বাস্তবায়নের অঙ্গীকার" জ্ঞানের ভিক্তিতে দৃঢ় বিশ্বাসে গ্রহনকারী ব্যাক্তির অবস্থানই ইসলামে স্বীকৃত ।

মানব রচিত ব্যবস্থাকে কেন জাহিলিয়্যাত বলা হয় এবং এর মৌলিক বিষয় কয়টি ও কি কি ?উত্তরঃ- মানুষকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সীমাবদ্ধ যোগ্যতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, এ কারনে সকল বিষয়ে নিজস্ব মেধা-বুদ্ধি দ্বারা নিশ্চিত জ্ঞান লাভ করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় বিধায়; মানব রচিত ব্যবস্থা জ্ঞানের ভিক্তিতে রচিত নয়, বরং আন্দাজ-অনুমানের ভিক্তিতে রচিত এবং মানব রচিত ব্যবস্থায় সার্বভৌমত্ব মানুষের উপর আরোপ করা হয় বিধায়; মানব রচিত ব্যবস্থাকে জাহিলিয়্যাত বলা হয় ।
সকল প্রকার মানব রচিত ব্যবস্থার মৌলিক বিষয় তিনটি- যথা
(ক) সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্ব মানুষের যা মূলতঃ আল্লাহর রুবুবিয়্যাতে শিরক ।
(খ) সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় মানুষেরই মনগড়া আইন-বিধানের আনুগত্যের অঙ্গীকার যা মূলতঃ আল্লাহর উলুহিয়্যাতে শিরক ।
(গ) সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় মানুষেরই মনগড়া আইন-বিধানের ভিক্তিতে নেতৃত্বদানকারী নেতার আনুগত্যের (অনুসরন-অনুকরন) অঙ্গীকার যা মূলতঃ আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নেতৃত্বের আনুগত্য (অনুসরন-অনুকরন) এর ক্ষেত্রে শিরক ।                                                                                                        

No comments:

Post a Comment